শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট

 শ্রীলঙ্কা জাতীয় ক্রিকেট দল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শ্রীলংকার প্রতিনিধিত্বকারী দল। দলটি প্রথম আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছে ১৯২৬-২৭ সনে, এবং তার পরে ট্রস্টএর ষ্ট্যাটাস পায় ১৯৮১ সনে, যা ছিল শ্রীলংকার অষ্টম জাতীয় টেষ্ট ক্রিকেট খেলা। দলটি পরিচালিত হয় শ্রীলংকা ক্রিকেট  দ্বারা।

 ...

শ্রীলঙ্কার জাতীয় ক্রিকেট দল উল্লেখযোগ্য সফলতা অর্জন করা শুরু করে ১৯৯০ সালের প্রথম দিকে, পরাজয়  উঠে দাড়ায় বিজয়ের দিকে ১৯৯৬ সালের ক্রিকেট World cup এ। তখন থেকে, দলটি তাদের বল বজায় রেখেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট দল পর পর 2007 ও 2011 সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে ফাইনালে পৌছে গিয়েছিল। কিন্তু দুটি খেলাতেই অবশেষে তারা রানার আপ হয়েছে। জনাথ জয়সুরিয়া (অবঃ) এবং অরবিন্দ ডি সিলভা (অবঃ) এর ব্যাটিং আর মুত্তিয়া মুরালিধরন  (অবঃ) এবং চামিন্দ্রা ভাস (অবঃ) এর বোলিংসহ আরও অনেক প্রতিভাবান ক্রিকেটারগণ, শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট দলের গত ১৫ বছরের সফলতার ভিত্তি ছিল।

শ্রীলঙ্কা ১৯৯৬ সালের ক্রিকেট World cup,  সালে  চ্যাম্পিয়ন ট্রফি, (কো চ্যাম্পিয়ন ভারত) এর সাথে বিজয়ী হয়, পর পর রানার্স আপ হয় ২০০৭ সালের ক্রিকেট বিশ্ব কাপ, ২০১১ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপ এবং ২০০৯ সালের আইসিসি World cup  এর। শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট দল বর্তমানে বেশ কিছু World record ধরে রেখেছে, রেকর্ডগুলোর মধ্য রয়েছে দলের সর্বোচ্চ রান তিন ধরনের খেলাতেই, যা হলো টেস্ট, ওডিয়াই এবং টি-টুয়েন্টি


শ্রীলঙ্কান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ইতিহাস

প্রারম্ভিক বছরগুলি

সিলন, নামেই দেশটির পরিচিতি ছিল ১৯৭২ সালের আগে, এখানে প্রথম শ্রেনীর ক্রিকেট সর্ব প্রথম খেলা হয়েছিল ১৯২৬-২৭ সনে ম্যারিলিবন ক্রিকেট ক্লাব এর সাথে নোমাডস গ্রাউন্ড, ভিকটোরিয়া পার্ক, কলম্বোতে ইনিংস হারিয়ে। দলটিতে প্রথম বিজয় এসেছিল পাটয়ালার সাথে দ্রুভ পানডভ ষ্টেডিয়াম এ ১৯৩২-৩৩ সনে। সিলন নিজের দিকটা সম্পূর্ণ করেছিল এ.জে. গোপালান ট্রফি খেলার মাধ্যমে ১৯৫০ সালে দিকে, শ্রীলঙ্কার নতুন নাম পরিবর্তনের পর ১৯৭০ সালেও। শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট দল একদিনের আন্তর্জাতিক  ম্যাচ দিয়ে আবির্ভূত হয় ১৯৭৫ ক্রিকেট world cup এ এবং তাদের প্রথম এক দিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে বিজয়ী হয় ভারতের বিপক্ষে যে কিনা জাতীয় ক্রিকেট খেলার দলটি এসেছে 1979 ক্রিকেট World cup এ। পরবর্তিতে শ্রীলঙ্কা আন্তজার্তিক ক্রিকেট কাউন্সিল  থেকে ১৯৮১ সালে টেস্ট এর স্ট্যাটাস পায়।

টেষ্ট স্ট্যাটাস ও অন্যান্য

  • টেস্টএর স্ট্যাটাস অর্জন ১৯৮১ তে এবং প্রথম টেস্ট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয় ১৯৮২ তে।
  • ১৯৮৫ তে ভারতের বিপক্ষে প্রথম টেষ্ট জয় পেয়ে সিরিজ বিজয়ী হয়ে রেকর্ড গড়ে।
  • প্রথম টেষ্ট সিরিজে বিজয়ী হয়ে দেশের বাইরে প্রথম টেষ্ট সিরিজ বিজয়ী হয় ১৯৯৫ সনে নিউজিল্যান্ড  এর বিপক্ষে।
  • ১৯৯৬ বিশ্বকাপ ক্রিকেট এ বিজয়ী হয় যা অনুষ্ঠিত হয়েছিল ভারত, শ্রীলঙ্কা  ও পাকিস্তানে
  • সেমি ফাইনালে পৌছে ছিল ২০০৩ বিশ্বকাপ ক্রিকেট এ যা অনুষ্ঠিত হয়েছিল দক্ষিন আফ্রিকাতে।
  • রানার আপ হয়েছিল ২০০৭ বিশ্বকাপ ক্রিকেট এ যা অনুষ্ঠিত হয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ এ।
  • রানার আপ হয়েছিল ২০০৯ আইসিসি World T20 cup এর যা অনুষ্ঠিত হয়েছিল ইংল্যান্ড এ।
  • সেমি ফাইনালে পৌছে ছিল ২০১৯ আইসিসি  World cup T20 এর যা অনুষ্ঠিত হয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ এ।
  • রানার আপ হয়েছিল ২০১১ World cup cricket এর যা অনুষ্ঠিত হয়েছিল ভারত , শ্রীলংকা এবং বাংলাদেশে
  • ১৯৮৬ সালে, ১৯৯৭ সালে, ২০০৪ সালে এবং ২০০৮ সালের এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল।

২০১১ পর্যন্ত, শ্রীলঙ্কান দল ২০৯ টি ম্যাচ খেলেছে, এগুলো বিজয় ২৯.৬৬%, হেরেছে ৩৫.৪১% এবং ড্র করেছে ৩৪.৯৩%। নিঃসন্দেহে শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটের সেরা সময় এসেছিল পূর্বে উল্লিখিত ১৯৯৬ বিশ্বকাপ ক্রিকেট এ, যখন তারা অরজুনা রানাতুংগার নেতৃত্বে র‌্যাংকিং এ উপরে থাকা অস্টেলিয়ার বিপক্ষে ফাইনালে খেলেছিল। শ্রীলঙ্কান খেলার ধরন ব্যাপক পরিবর্তন এনেছিল বৈপ্লবিক ভাবে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের  এ, এবং চরিত্রায়ন করা হয়েছিল তাদের প্রচন্ড আক্রমণাত্মক ওপেনার ব্যাটসম্যান সনাথ জয়সুরিয়া এবং রমেশ কালুভিথারানার  প্রথম পনের ওভারের ইনিংস এ যাতে সুযোগের সদ ব্যবহার করতে পারে সে সময়ের কড়া ফিল্ডিং আরোপের আগেই। এই কৌশলটা নিদর্শন রেখে গেছে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে।


শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট ২০০৪ সালে শ্রীলঙ্কাতে হোয়াইট করে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৫-০ তে ওডিয়াই এ, যা ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা দলের জন্য বড় সর্বনাশ দ্বিপার্শ্বিক একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সিরিজে। শ্রীলঙ্কা ৫-০ তে হোয়াইট করে ২০০৬ সালে ইংল্যান্ড কে ন্যাটওয়েষ্ট সিরিজ এ, যা ছিল বড় সর্বনাশ ইংল্যান্ট দলের জন্য দ্বিপার্শ্বিক ওডিআই সিরিজে। সনাথ জয়সুরিয়া হয়েছিল ম্যান অব দা সিরিজ। শ্রীলঙ্কা জিম্বাবুয়ে  কেও হোয়াইট ওয়াস করেছিল ওডিআই সিরিজে ৫-০ তে, যা অনুষ্ঠিত হয়েছিল জিম্বাবুয়ের  ২০০৪ এবং ২০০৮ সালে।

মাইলস্টোন

  • শ্রীলঙ্কাই একমাত্র দল যারা আইসিসি ট্রফি বিজয়ী আর তারা পরবর্তিতে ১৯৯৬ সালের বিশ্ব কাপ ক্রিকেট বিজয়ীও।
  • শ্রীলঙ্কাই একমাত্র দল যারা এশিয়া কাপ এর প্রতিটি পর্বে অংশ নিয়েছে।
  • শ্রীলঙ্কা হলো ৪র্থ দল যারা দুটি বিশ্ব কাপ ক্রিকেট এ ফাইনালে পৌছেছিল (২০০৭ এবং ২০১১), এর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজ (১৯৭৫,১৯৭৯ এবং ১৯৮৩) সালে, অস্ট্রেলিয়া (১৯৯৬, ১৯৯৯, ২০০৩, ২০০৭) সালে, এবং ইংল্যান্ড (১৯৮৭ এবং ১৯৯২) সালে পৌছেছিল।

২০০৯ সালের গুলি করার ঘটনা

২০০৯ সালের ৩রা মার্চে, পাকস্থানের লাহোরে শ্রীলঙ্কান দলের বহরে বন্দুক ধারী আক্রমণ করে। যাতে পাঁচ পুলিশ মারা গিয়েছিল এবং সাত জন ক্রিকেটার এবং কোচ দলের সদস্য আহত হয়েছিল। দলটি ছিল গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে এ সেখানে তারা তৃতীয় দিনের দ্বিতীয় টেষ্ট এর প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এই ঘটনার পর শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট বোর্ড কর্তৃক ম্যাচটি বাতিল ঘোষণা করা হয়েছিল। শ্রীলঙ্কা পাকিস্তান সফরে রাজি ছিল, কিন্তু ভারত তাতে রাজি হয়নি নিরাপত্বার ব্যাপারে

পরিচালকবর্গ

শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট, যা আগে ছিল শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (Board for Cricket Control in Sri Lanka-(BCCSL),হলো শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট দলের পরিচালক। এটি শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট দল ও অভ্যন্তরে অনুষ্ঠিত প্রথম ক্লাসের ক্রিকেট নিয়ন্তন করে। দক্ষ শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট পরিচালনা করছে এবং নিয়ন্ত্রণ করছে স্থানীয় বড় বড় প্রতিযোগিতা: প্রথম ক্লাস টুর্নামেন্ট প্রিমিয়ার ট্রফি, লিস্ট এ ক্রিকেট  টুর্নামেন্ট প্রিমিয়ার লিমিটেড ওভার টুর্নামেন্ট এবং টুয়েন্টি২০ টুর্নামেন্ট। এ ছারাও শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট ইন্টার-প্রভিন্সিয়াল ক্রিকেট টুর্নামেন্ট হোষ্ট এবং সংগঠিত করে থাকে, এটাতে প্রতিযোগিতা হয় পাঁচটি দলের এবং অংশ নেয় আলাদা চারটি শ্রীলঙ্কান প্রদেশ থেকে।


শ্রীলংকার ষ্টেডিয়াম

  • পাল্লেকালে স্টেডিয়াম
  • গল স্টেডিয়াম
  • ওয়েলাগেদাড়া স্টেডিয়াম
  • গাদ্দাফি স্টেডিয়াম


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url